আজাদুর রহমান চন্দন
১৯৭১ সালে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি যখন বিজয়ের উল্লাসে উদ্বেলিত, তখনো রাজধানীর শত শত মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ ছিল না। কারণ দুই দিন আগেই ব্ল্যাক আউট আর কারফিউয়ের মধ্যে তাদের স্বজনদের বাড়ি থেকে তুলে নেয় কালো সোয়েটার আর খাকি প্যান্ট পরা মুখোশধারী হায়েনারা। ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে যাঁদের তুলে নেওয়া হয়, তাঁরা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক, প্রতিথযশা সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী–এক কথায় বুদ্ধিজীবী। দেশের ওই মেধাবী সন্তানরা আর ফিরে আসেননি। বিজয়ের দুই দিন পর ঢাকার রায়েরবাজারে সন্ধান মিলল একটি বধ্যভূমির। পরিত্যক্ত এক ইটখোলার জল-কাদায় চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় পড়ে ছিল অসংখ্য লাশ। ওই লাশগুলোই ছিল বুদ্ধিজীবীদের।
এ বিষয়ে ১৯৭১ সালের ১৯ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানি সেনা ও স্থানীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া তাদের সহযোগীরা প্রায় ৩০০ বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে যায়, যাঁদের মধ্যে ১২৫ জন চিকিৎসক, অধ্যাপক, লেখক ও শিকের লাশ পাওয়া গেছে ঢাকার শহরতলির এক বধ্যভূমিতে। Continue Reading →
আজাদুর রহমান চন্দন
‘ধর্মান্ধ ছাত্রদের নিয়ে গোপনে তৈরি হলো আলবদর বাহিনী। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক ও ছাত্রদের গোপনে হত্যার চক্রান্ত করে। শুধু গোপন চক্রান্তই নয়, আলবদর বাহিনী ওই সব হত্যাকাণ্ড সংঘটিতও করেছিল লোকচুর আড়ালে।… জামায়াতে ইসলামীর মতো সংগঠনের ধর্মান্ধ মানুষগুলোকে ধর্ম রার নামে উদ্বুদ্ধ করে তাদের নিয়ে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ গোপনে গঠন করেছিল ওই দল। এদের একান্ত সহযোগিতায় আরো হত্যায় বিষাদক্লিষ্ট হয়েছে পূর্ব পাকিস্তান।’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনুসন্ধান শেষে কথাগুলো লিখেছিলেন মার্কিন সাংবাদিক ও গবেষক রবার্ট পেইন তাঁর ‘ম্যাসাকার’ গ্রন্থে।
জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যদের নিয়ে ১৯৭১ সালে গঠন করা হয়েছিল কুখ্যাত আলবদর বাহিনী। নিউ ইয়র্ক টাইমসে ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি এক বিশেষ প্রতিবেদনে আলবদর বাহিনীকে উগ্র মুসলিমদের একটি গোপন কমান্ডো ধরনের সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের একটি বিশেষ দল এ বাহিনীকে প্রশিণ দিত এবং পরিচালনা করত। ওই সেনা কর্মকর্তাদের একজন ছিলেন ক্যাপ্টেন তাহির। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর ডেস্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পাওয়া যায়। একটি নোটে লেখা ছিল, ‘ক্যাপ্টেন তাহির, ভেহিকল ফর আলবদর’ এবং ‘ইউজ অব আলবদর’। Continue Reading →