আজাদুর রহমান চন্দন
ফ. কা. চৌধুরী নামে পরিচিত চট্টগ্রামের ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (কনভেনশন) সভাপতি। ষাটের দশকে পাকিস্তানের মন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকারও হন ফ.কা.। সারা পাকিস্তানেই তিনি ছিলেন প্রচণ্ড প্রতাপশালী। ফ.কা. চৌধুরী এতটাই প্রভাবশালী ও দাম্ভিক ছিলেন যে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী গণহত্যা শুরু করার পর মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, পিডিপিসহ দালাল দলগুলোর অন্য নেতারা দল বেঁধে গভর্নর টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও ফ.কা. তার সঙ্গে দেখা করেছেন শুধু নিজ দলের জেনারেল সেক্রেটারি মালিক মোহাম্মদ কাসিমকে নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধকালে শান্তি কমিটিরও আলাদা একটি ধারা ছিল ফ.কা.র নেতৃত্বে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর তার প্রভাব ছিল যেমন অসীম, তেমনি চট্টগ্রামে মুক্তিকামী মানুষ, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের ওপর তার নির্যাতনও ছিল অসহনীয়। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের পর থেকে আত্মসমর্পণের কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তার বাসায় সব সময় মোতায়েন থাকত পাকিস্তান বাহিনীর এক প্লাটুন সৈন্য। ফ.কা.র অনুচরেরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরে আনত নিরপরাধ লোকজন আর ছাত্রদের।
আজাদুর রহমান চন্দন
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি অবশেষে কার্যকর করা হয়েছে। আদালতের রায় অনুযায়ী আজ শনিবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে শীর্ষস্থানীয় এই দুই অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে আইজি প্রিজন্স জানান। এর মধ্য দিয়ে দেশে প্রথম কোনো মন্ত্রীর ফাঁসি কার্যকর হলো। দুই অপরাধীই ভিন্ন ভিন্ন সরকারের সময় মন্ত্রী ছিলেন। দুজনের মধ্যে একাত্তরের কুখ্যাত আলবদর বাহিনীর প্রধান মুজাহিদের প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগে। একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে এটিই প্রথম ফাঁসি। তবে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে এ নিয়ে চারজনের ফাঁসি কার্যকর হলো। ফাঁসি কার্যকর শেষে র্যাব ও পুলিশ প্রহরায় সাকা চৌধুরীর লাশ চট্টগ্রামে এবং মুজাহিদের লাশ ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিচার নিয়ে বিভিন্ন সময়ে দম্ভোক্তি প্রকাশকারী দুই মানবতাবিরোধী অপরাধীর ফাঁসি কার্যকর করার আগে কারাগার এলাকায় জড়ো হন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা এবং গণজাগরণ মঞ্চের কয়েকজন কর্মী। তাঁরা সাকা ও মুজাহিদের ফাঁসি দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে স্লোগানও দেন। Continue Reading →