Posted on October 24, 2014, 4:35 pm By arbu
আজাদুর রহমান চন্দন
পরাধীন ভারতবর্ষে নানান মতে নানান দলে দলাদলি সত্ত্বেও আলেম-ওলামা, সুফি, সাধু-সন্ন্যাসীসহ সব জাতপাত, শ্রেণি-পেশা ও দলের মানুষ যখন স্বাধীনতা কামনায় ‘মানব না এ বন্ধনে, মানব না এ শৃঙ্খলে’ বলে একাট্টা, তখনো এ ভূখণ্ডের ক্ষুদ্র একটি অংশ লিপ্ত ছিল ব্রিটিশ শাসকদের তাঁবেদারিতে। এর কারণও ছিল। জামায়াতে ইসলামী নামে ধর্মের লেবাস পরা ওই দলটির যে জন্মই দেওয়া হয়েছিল ব্রিটিশ প্রভুদের তাঁবেদারি করার জন্য। গোলাম আযমের গুরু মওদুদীর গড়া দলটি সেই কাজ ভালোভাবেই সেরেছে তখন। তবে তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। পরাধীনতার শিকল ছিঁড়ে ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হয়। তবে ধর্ম ব্যবসায়ী একটি মহলের চক্রান্তের সুযোগে ভারতবর্ষকে দুর্বল করার হীন উদ্দেশে তখন তথাকথিত দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভাগ করা হয় দেশ। ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টির কোনো মিল না থাকা সত্ত্বেও হাজার মাইল দূরে থাকা দুটি ভূখণ্ডকে এক রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করা হয়। যদিও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও গোলাম অযমের দল জামায়াতের সমর্থন ছিল না। গোলাম আযমের গুরু ও জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদী তখন বলেছিলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি করা কেউই ‘খাঁটি মুসলমান’ নয়।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর বেশির ভাগ সময়েই দেশটি থেকেছে সামরিক শাসনের জাঁতাকলে। আর গোলাম আযমরা বরাবরই থেকেছেন সামরিক স্বৈরশাসকদের পক্ষে। মওদুদী তাঁর এক বইয়ে লেখেন, ‘গণতন্ত্র বিষাক্ত দুধের মাখনের মতো।’ আরেক বইয়ে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের মাধ্যমে কোনো সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ইসলাম অনুযায়ী হারাম।’ যদিও পরে জামায়াত পাঞ্জাবের প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ব্যাপক প্রচার চালিয়ে মওদুদীকে জেল থেকে বের করে আনে। ১৯৫১ সালে দলটি পাঞ্জাবের প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশ নেয় এবং তাতে ভরাডুবি হয়।
পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকেই গোলাম আযম জামায়াতে যোগ দেন। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি দলটির প্রাদেশিক শাখার শীর্ষপদে আসীন হন। ১৯৫৭ সালে গোলাম আযমকে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল নিযুক্ত করা হয়। ১৯৬৬ সালে ৬ দফার বিরোধিতা করে গোলাম আযমের দল। পরে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাকে ঘিরে পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল হয়ে উঠলে এবং সারা পাকিস্তানে চরম রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দিলে আইয়ুব খানের আস্থা অর্জন করে নেয় জামায়াত।
পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকেই গোলাম আযম জামায়াতে যোগ দেন। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি দলটির প্রাদেশিক শাখার শীর্ষপদে আসীন হন। ১৯৫৭ সালে গোলাম আযমকে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল নিযুক্ত করা হয়। ১৯৬৬ সালে ৬ দফার বিরোধিতা করে গোলাম আযমের দল। পরে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাকে ঘিরে পূর্ব পাকিস্তান উত্তাল হয়ে উঠলে এবং সারা পাকিস্তানে চরম রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দিলে আইয়ুব খানের আস্থা অর্জন করে নেয় জামায়াত।
মুক্তিযুদ্ধকালীন যত চক্রান্ত ও অপরাধ
বাঙালি নির্মূল ‘অভিযানে পাকিস্তানিদের সাফল্য ছিল সামান্যই। কারণ পাকিস্তানি সেনারা সন্দেহভাজন বাঙালিদের চেহারা যেমন চিনত না, তেমনি পড়তে পারত না বাংলায় লেখা অলিগলির নম্বরও। এ জন্য তাদের নির্ভর করতে হতো স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতার ওপর।…ওই সময় যাঁরা এগিয়ে আসেন তাঁরা হলেন কাউন্সিল মুসলিম লীগের খাজা খয়ের উদ্দিন, কনভেনশন মুসলিম লীগের ফজলুল কাদের চৌধুরী, কাইয়ুম মুসলিম লীগের খান এ সবুর খান, জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক গোলাম আযম ও নেজামে ইসলাম পার্টির মেৌলভি ফরিদ আহমদের মতো মুষ্টিমেয় কিছু ডানপন্থী।’ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের তখনকার জনসংযোগ কর্মকর্তা মেজর (পরে ব্রিগেডিয়ার) সিদ্দিক সালিক তাঁর উইটনেস টু সারেন্ডার বইয়ে এসব কথা লিখেছেন।
গোলাম আযমদের এই এগিয়ে আসাটা নিছক গণহত্যার জন্য বাঙালিদের চিনিয়ে দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং রাজাকার-আলবদরের মতো বিভিন্ন সহযোগী বাহিনী গঠন করে তাঁরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়েও বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার নকশাকার ছিলেন গোলাম আযম। তিনি জামায়াতে ইসলামীর আমির ছিলেন। এই জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ও তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যদের নিয়ে আধাসামরিক বাহিনী শানি্ত কমিটি, আলবদর, আলশামস, রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। এসব বাহিনীর অপরাধের দায় তাঁর।
দলিলপত্র থেকেও দেখা যায়, ১৯৭১ সালে গোলাম আযম তাঁর পুরো দলকেই সহযোগী বাহিনীতে রূপান্তরিত করেছিলেন। গোলাম আযম নিজেই তখন বলেছেন, ‘পাকিস্তান টিকিয়ে রাখতেই জামায়াতে ইসলামী শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছে।’ (সূত্র : দৈনিক পাকিস্তান, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)। একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার ১০ দিনের মধ্যে ৪ এপ্রিল নূরুল আমিন, গোলাম আযম, খাজা খয়ের উদ্দিনরা পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। দৈনিক সংগ্রামসহ কয়েকটি পত্রিকায় তখন এ-সংক্রান্ত খবর ও ছবি প্রকাশিত হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মে মাসে জামায়াতের নেতা-কর্মীরাই প্রথম খুলনায় শানি্ত কমিটির তত্ত্বাবধানে রাজাকার বাহিনী গঠন করেছিল। পরে গোলাম আযমের তদবিরেই রাজাকার বাহিনীকে সরাসরি প্রতিরক্ষা বাহিনীর অধীনে নেওয়া হয়।
গোলাম আযমের নেতৃত্বাধীন শান্তি কমিটিও কোনো সাধারণ কমিটি ছিল না। নামে শান্তি কমিটি হলেও একাত্তরের ৯ মাস তারা অশান্তির আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে বাঙালিদের। একাত্তরের ২৯ জুলাই ওয়াশিংটনে হেনরি কিসিঞ্জারের নেতৃত্বাধীন সিনিয়র রিভিউ গ্রুপের জন্য প্রণীত একটি পেপারে শান্তি কমিটিকে সামরিক শাসনের প্রতীক হিসেবে উলে্লখ করা হয়। যমদূত রাজাকার বাহিনী সাধারণভাবে শান্তি কমিটির নেতৃত্বাধীন ছিল। প্রতিটি রাজাকার ব্যাচের ট্রেনিং শেষ হওয়ার পর শান্তি কমিটির স্থানীয় প্রধান তাদের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন।
গোলাম আযমদের এই এগিয়ে আসাটা নিছক গণহত্যার জন্য বাঙালিদের চিনিয়ে দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং রাজাকার-আলবদরের মতো বিভিন্ন সহযোগী বাহিনী গঠন করে তাঁরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়েও বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার নকশাকার ছিলেন গোলাম আযম। তিনি জামায়াতে ইসলামীর আমির ছিলেন। এই জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ও তাদের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যদের নিয়ে আধাসামরিক বাহিনী শানি্ত কমিটি, আলবদর, আলশামস, রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। এসব বাহিনীর অপরাধের দায় তাঁর।
দলিলপত্র থেকেও দেখা যায়, ১৯৭১ সালে গোলাম আযম তাঁর পুরো দলকেই সহযোগী বাহিনীতে রূপান্তরিত করেছিলেন। গোলাম আযম নিজেই তখন বলেছেন, ‘পাকিস্তান টিকিয়ে রাখতেই জামায়াতে ইসলামী শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছে।’ (সূত্র : দৈনিক পাকিস্তান, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১)। একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার ১০ দিনের মধ্যে ৪ এপ্রিল নূরুল আমিন, গোলাম আযম, খাজা খয়ের উদ্দিনরা পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। দৈনিক সংগ্রামসহ কয়েকটি পত্রিকায় তখন এ-সংক্রান্ত খবর ও ছবি প্রকাশিত হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মে মাসে জামায়াতের নেতা-কর্মীরাই প্রথম খুলনায় শানি্ত কমিটির তত্ত্বাবধানে রাজাকার বাহিনী গঠন করেছিল। পরে গোলাম আযমের তদবিরেই রাজাকার বাহিনীকে সরাসরি প্রতিরক্ষা বাহিনীর অধীনে নেওয়া হয়।
গোলাম আযমের নেতৃত্বাধীন শান্তি কমিটিও কোনো সাধারণ কমিটি ছিল না। নামে শান্তি কমিটি হলেও একাত্তরের ৯ মাস তারা অশান্তির আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে বাঙালিদের। একাত্তরের ২৯ জুলাই ওয়াশিংটনে হেনরি কিসিঞ্জারের নেতৃত্বাধীন সিনিয়র রিভিউ গ্রুপের জন্য প্রণীত একটি পেপারে শান্তি কমিটিকে সামরিক শাসনের প্রতীক হিসেবে উলে্লখ করা হয়। যমদূত রাজাকার বাহিনী সাধারণভাবে শান্তি কমিটির নেতৃত্বাধীন ছিল। প্রতিটি রাজাকার ব্যাচের ট্রেনিং শেষ হওয়ার পর শান্তি কমিটির স্থানীয় প্রধান তাদের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন।
এ ছাড়া গোলাম আযমের নেতৃত্বাধীন জামায়াতে ইসলামীর অফিস থেকেও রাজাকারদের পরিচয়পত্র দেওয়া হতো। সারা দেশে সব থানা-জেলার জামায়াত নেতারা ছিলেন রাজাকার বাহিনীর সংগঠক। আর জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘকে রূপান্তরিত করা হয়েছিল কুখ্যাত আলবদর বাহিনীতে। জামায়াতিরাই তখন বলত, ‘আলবদর সাক্ষাত্ আজরাইল।’
রাজাকার বাহিনী গঠনের উদ্যোগ, ভারী অস্ত্র পেতে দেন-দরবার : যমদূত রাজাকার বাহিনী গঠনের প্রস্তাবটি গোলাম আযম দিয়েছিলেন ১৯ জুন রাওয়ালপিন্ডিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দেখা করে। এর আগের দিন দৈনিক পাকিস্তানের খবরে বলা হয়, গোলাম আযম লাহোরে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে তিনি পূর্ব পাকিস্তান সম্পর্কে কিছু সুপারিশ রাখবেন। তবে এগুলো আগেভাগে প্রকাশ করা ভালো হবে না।’ ২০ জুন জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির ‘দুষ্কৃতকারীদের মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে দেশের আদর্শ ও সংহতিতে বিশ্বাসী লোকদের হাতে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।’ উল্লেখ্য, জামায়াতিরা তখন মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সমর্থকদের ‘দুষ্কৃতকারী’, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ ইত্যাদি বলত।
সাম্প্রদায়িক উস্কানি : আরেকটি গোপন প্রতিবেদনে [নম্বর ৫৪৯(১৫৯) পল/এস(আই)] উল্লেখ আছে, আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সম্মেলনে গোলাম আযম বলেন, ‘হিন্দুরা মুসলমানদের শত্রু। তারা সব সময় পাকিস্তানকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে।’ ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাইয়ের দৈনিক সংগ্রামের খবর অনুযায়ী, ১৬ জুলাই রাজশাহীতে শান্তি কমিটির সমাবেশে গোলাম আযম বলেন, হিন্দুরা মুসলমানের বন্ধু এমন কোনো প্রমাণ নেই। এ উস্কানিরই ফল হলো ওই সময় অনেক বাঙালিকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা এবং হিন্দুদের হত্যা, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, সহায়-সম্পদ লুট ইত্যাদি।
মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করার নির্দেশ : পূর্ব পাকিস্তান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোপন প্রতিবেদন [নম্বর ৫৪৯(১৫৯) পল/এস (আই)] মতে, কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের ওই সম্মেলনে গোলাম আযম প্রতি গ্রামে শানি্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ‘দুষ্কৃতকারী’ আখ্যা দিয়ে তাঁদের নির্মূল করারও নির্দেশ দেন তিনি। গোলাম আযম বলেন, খুব শিগগির রাজাকার, মুজাহিদ ও পুলিশ মিলে দুষ্কৃতকারীদের মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।
সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধের প্রতিবেদনে [নম্বর ৬০৯(১৬৯) পল/এস(আই)] বলা হয়েছে, ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জামায়াতের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়, যাতে গোলাম আযমসহ অন্যরা বক্তব্য দেন। সভায় প্রদেশের রাজনৈতিক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয় এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ‘বিদ্রোহীদের’ (মুক্তিযোদ্ধা) নির্মূল করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
একাত্তরের ১৭ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে রাজাকার ক্যাম্প পরিদর্শন করেন গোলাম আযম। ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত দৈনিক সংগ্রামের খবরে বলা হয়, প্রশিক্ষণার্থী রাজাকারদের প্রতি ‘ভালোভাবে ট্রেনিং গ্রহণ করে যত শিগগির সম্ভব এসব অভ্যন্তরীণ শত্রুকে (মুক্তিযোদ্ধা) দমন করার জন্য গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান’ জানান তিনি।
স্বাধীনতার পরও দেশবিরোধী চক্রান্ত : গোলাম আযম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭৮ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে নিজে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা ও আলোচনার মাধ্যমে এবং বিবৃতি, স্মারকলিপি, প্রবন্ধ ও প্রচারপত্র বিলি করার মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশকে দুর্বল, সহায়হীন ও বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করেছেন। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর দেশ শত্রুমুক্ত হলে গোলাম আযম পাকিস্তানে বসে মাহমুদ আলী ও খাজা খয়ের উদ্দিনের মতো আরো দুই দেশদ্রোহীর সঙ্গে মিলে ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এই খাজা খয়ের উদ্দিন ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালে কুখ্যাত শান্তি কমিটির আহ্বায়ক, আর মাহমুদ আলী ছিলেন ইয়াহিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত্কারী তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের সদস্য। ১৯৭২ সালে গোলাম আযম লন্ডনেও ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি’ গঠন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র উচ্ছেদ করে আবার এই ভূখণ্ডকে পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার চক্রান্ত করেন।
১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে গোলাম আযম রিয়াদে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামী যুব সম্মেলনে যোগ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব মুসলিম রাষ্ট্রের সাহায্য প্রার্থনা করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ সাল নাগাদ তিনি সাতবার সৌদি বাদশাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। কখনো তিনি বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে আবার কখনো বাংলাদেশকে আর্থিক বা বৈষয়িক সাহায্য না দিতেও অনুরোধ করেন বাদশাহকে। ১৯৭৪ সালে রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর উদ্যোগে মক্কায় অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এবং ১৯৭৭ সালে কিং আব্দুল আজিজ ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন তিনি। ১৯৭৩ সালে বেনগাজিতে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিতে জোর তদবির করেন প্রতিনিধিদের কাছে। একই বছর মিসিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা অ্যান্ড কানাডার বার্ষিক সম্মেলনে গোলাম আযম বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানভুক্ত করার জন্য কাজ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। ১৯৭৭ সালে ইস্তাম্বুলে ইসলামিক ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দেন। ১৯৭৩ সালে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস ইসলামিক সোসাইটিজের বার্ষিক সম্মেলনে এবং লেস্টারে ইউকে ইসলামিক কমিশনের বার্ষিক সভায় তিনি বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দেন। ১৯৭৪ সালে তিনি মাহমুদ আলীসহ কয়েকজন পাকিস্তানিকে নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটির এক বৈঠক করেন পূর্ব লন্ডনে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার চষ্টো ব্যর্থ হয়েছে-এটা বুঝতে পেরে ওই বৈঠকে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিয়ে একটি কনফেডারেশন গড়ার আন্দোলন চালানোর। ওই সভায় গোলাম আযম তাঁর বক্তব্যে ঝুঁকি নিয়ে হলেও বাংলাদেশে ফিরে অভ্যন্তরে থেকে ‘কাজ চালানো’র প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। ১৯৭৭ সালে লন্ডনের হোলি ট্রিনিটি চার্চ কলেজে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি ওই কথারই পুনরাবৃত্তি করেন এবং সেই উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি ভিসা নিয়ে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে আসেন। গোলাম আযমের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালের দেওয়া রায়েও এসব তথ্য উল্লেখ আছে।
শেষ নোংরামি
সাম্প্রদায়িক উস্কানি : আরেকটি গোপন প্রতিবেদনে [নম্বর ৫৪৯(১৫৯) পল/এস(আই)] উল্লেখ আছে, আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের সম্মেলনে গোলাম আযম বলেন, ‘হিন্দুরা মুসলমানদের শত্রু। তারা সব সময় পাকিস্তানকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে।’ ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাইয়ের দৈনিক সংগ্রামের খবর অনুযায়ী, ১৬ জুলাই রাজশাহীতে শান্তি কমিটির সমাবেশে গোলাম আযম বলেন, হিন্দুরা মুসলমানের বন্ধু এমন কোনো প্রমাণ নেই। এ উস্কানিরই ফল হলো ওই সময় অনেক বাঙালিকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা এবং হিন্দুদের হত্যা, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, সহায়-সম্পদ লুট ইত্যাদি।
মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মূল করার নির্দেশ : পূর্ব পাকিস্তান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোপন প্রতিবেদন [নম্বর ৫৪৯(১৫৯) পল/এস (আই)] মতে, কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের ওই সম্মেলনে গোলাম আযম প্রতি গ্রামে শানি্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ‘দুষ্কৃতকারী’ আখ্যা দিয়ে তাঁদের নির্মূল করারও নির্দেশ দেন তিনি। গোলাম আযম বলেন, খুব শিগগির রাজাকার, মুজাহিদ ও পুলিশ মিলে দুষ্কৃতকারীদের মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।
সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধের প্রতিবেদনে [নম্বর ৬০৯(১৬৯) পল/এস(আই)] বলা হয়েছে, ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জামায়াতের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়, যাতে গোলাম আযমসহ অন্যরা বক্তব্য দেন। সভায় প্রদেশের রাজনৈতিক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয় এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ‘বিদ্রোহীদের’ (মুক্তিযোদ্ধা) নির্মূল করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
একাত্তরের ১৭ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে রাজাকার ক্যাম্প পরিদর্শন করেন গোলাম আযম। ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত দৈনিক সংগ্রামের খবরে বলা হয়, প্রশিক্ষণার্থী রাজাকারদের প্রতি ‘ভালোভাবে ট্রেনিং গ্রহণ করে যত শিগগির সম্ভব এসব অভ্যন্তরীণ শত্রুকে (মুক্তিযোদ্ধা) দমন করার জন্য গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান’ জানান তিনি।
স্বাধীনতার পরও দেশবিরোধী চক্রান্ত : গোলাম আযম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭৮ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে নিজে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা ও আলোচনার মাধ্যমে এবং বিবৃতি, স্মারকলিপি, প্রবন্ধ ও প্রচারপত্র বিলি করার মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশকে দুর্বল, সহায়হীন ও বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করেছেন। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর দেশ শত্রুমুক্ত হলে গোলাম আযম পাকিস্তানে বসে মাহমুদ আলী ও খাজা খয়ের উদ্দিনের মতো আরো দুই দেশদ্রোহীর সঙ্গে মিলে ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এই খাজা খয়ের উদ্দিন ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালে কুখ্যাত শান্তি কমিটির আহ্বায়ক, আর মাহমুদ আলী ছিলেন ইয়াহিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত্কারী তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের সদস্য। ১৯৭২ সালে গোলাম আযম লন্ডনেও ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি’ গঠন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র উচ্ছেদ করে আবার এই ভূখণ্ডকে পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার চক্রান্ত করেন।
১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে গোলাম আযম রিয়াদে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামী যুব সম্মেলনে যোগ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সব মুসলিম রাষ্ট্রের সাহায্য প্রার্থনা করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ সাল নাগাদ তিনি সাতবার সৌদি বাদশাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। কখনো তিনি বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে আবার কখনো বাংলাদেশকে আর্থিক বা বৈষয়িক সাহায্য না দিতেও অনুরোধ করেন বাদশাহকে। ১৯৭৪ সালে রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর উদ্যোগে মক্কায় অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এবং ১৯৭৭ সালে কিং আব্দুল আজিজ ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন তিনি। ১৯৭৩ সালে বেনগাজিতে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিতে জোর তদবির করেন প্রতিনিধিদের কাছে। একই বছর মিসিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা অ্যান্ড কানাডার বার্ষিক সম্মেলনে গোলাম আযম বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানভুক্ত করার জন্য কাজ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। ১৯৭৭ সালে ইস্তাম্বুলে ইসলামিক ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দেন। ১৯৭৩ সালে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস ইসলামিক সোসাইটিজের বার্ষিক সম্মেলনে এবং লেস্টারে ইউকে ইসলামিক কমিশনের বার্ষিক সভায় তিনি বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দেন। ১৯৭৪ সালে তিনি মাহমুদ আলীসহ কয়েকজন পাকিস্তানিকে নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটির এক বৈঠক করেন পূর্ব লন্ডনে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার চষ্টো ব্যর্থ হয়েছে-এটা বুঝতে পেরে ওই বৈঠকে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিয়ে একটি কনফেডারেশন গড়ার আন্দোলন চালানোর। ওই সভায় গোলাম আযম তাঁর বক্তব্যে ঝুঁকি নিয়ে হলেও বাংলাদেশে ফিরে অভ্যন্তরে থেকে ‘কাজ চালানো’র প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। ১৯৭৭ সালে লন্ডনের হোলি ট্রিনিটি চার্চ কলেজে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি ওই কথারই পুনরাবৃত্তি করেন এবং সেই উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে পাকিস্তানি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি ভিসা নিয়ে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে আসেন। গোলাম আযমের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালের দেওয়া রায়েও এসব তথ্য উল্লেখ আছে।
শেষ নোংরামি
অনেক গুরুতর অপরাধীর ক্ষেত্রেও জীবনের শেষ মুহূর্তে তথা মৃত্যুর সময় অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত হতে বা ক্ষমা চাইতে দেখা যায়। ব্যতিক্রম এই গোলাম আযম। মৃত্যুকালেও তিনি বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাননি, এমনকি অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁর কোনো অনুশোচনাও ছিল না। বরং তাঁর ছেলের দাবি সত্যি হয়ে থাকলে তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত কাউকে দিয়ে জানাজায় ইমামতি করানোর ‘ইচ্ছা’ জানিয়ে নোংরা ‘রাজনীতি’ করে গেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে একাধিক বেসরকারি টেলিভিশনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন জামায়াত নেতার আইনজীবী তাজুল ইসলাম। তাজুল বলছিলেন, গোলাম আযম মগবাজারে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত হতে চেয়েছেন এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অথবা মতিউর রহমান নিজামীর ইমামতিতে জানাজা পড়ানোর ইচ্ছার কথা পরিবারকে জানিয়ে গেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াতের আমির গোলাম আযমের মতো দলের বর্তমান নায়েবে আমির সাঈদীও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত। দলটির আমির নিজামীর বিরুদ্ধে মামলার রায় অপেক্ষমাণ।
পরে গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমীও হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জানাজা পড়াবেন। কিন্তু তাঁরা দুজনই কারাগারে থাকায় জানাজা কে পড়াবেন, তা দলের নেতারা ও পরিবারের সদস্যরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
ট্রাইবু্যনাল রায়ে যাঁকে মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী সব অপরাধের পরিকল্পনাকারী বা নকশাকার আখ্যা দিয়েছেন, তেমন একজন গুরুতর অপরাধীর ইচ্ছা পূরণ হলে ভবিষ্যতে অন্য দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও একই ধরনের শেষ ইচ্ছা জানাতে পারেন।
পরে গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমীও হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জানাজা পড়াবেন। কিন্তু তাঁরা দুজনই কারাগারে থাকায় জানাজা কে পড়াবেন, তা দলের নেতারা ও পরিবারের সদস্যরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
ট্রাইবু্যনাল রায়ে যাঁকে মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী সব অপরাধের পরিকল্পনাকারী বা নকশাকার আখ্যা দিয়েছেন, তেমন একজন গুরুতর অপরাধীর ইচ্ছা পূরণ হলে ভবিষ্যতে অন্য দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরাও একই ধরনের শেষ ইচ্ছা জানাতে পারেন।
No comments yet Categories: জাতীয়, মুক্তিযুদ্ধ