আজাদুর রহমান চন্দন
চট্টগ্রাম শহরের নন্দনকানন টিঅ্যান্ডটি অফিসের পেছনের সড়কে এক হিন্দু পরিবারের মালিকানাধীন মহামায়া ভবনটি ১৯৭১ সালে আলবদর বাহিনী কেড়ে নিয়ে এর নাম দিয়েছিল ডালিম হোটেল। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত ডালিম হোটেলই ছিল চট্টগ্রামে আলবদর ও রাজাকারদের অন্যতম নির্যাতনকেন্দ্র। এ বন্দিশিবির ও নির্যাতনকেন্দ্রে আলবদরদের হাতে নির্যাতনের শিকার ও খুন হয়েছেন চট্টগ্রামের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী বাঙালি। আর একাত্তরে ইসলামী ছাত্রসংঘের চট্টগ্রাম শহর শাখার সভাপতি হিসেবে সেখানকার আলবদরের প্রধান ছিলেন মীর কাসেম আলী। ওই সময় তাঁর নেতৃত্বাধীন আলবদর বাহিনীর নির্যাতনের স্মৃতি স্মরণ করে আজও শিউরে ওঠেন চট্টগ্রামের অনেক মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী বাঙালির বিরুদ্ধে মীর কাসেম আলীর নৃশংসতা এতটাই তীব্র ছিল যে একাত্তরের শেষ দিকে তাঁকে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদকের পদে বসানো হয়েছিল। সেই সুবাদে আলবদর হাইকমান্ডেও ঠাঁই হয়।মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামে ‘বাঙালি খান’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই আলবদর পাণ্ডা মীর কাসেম আলী দেশ স্বাধীন হওয়ার স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সালে ইসলামী ছাত্রসংঘ নাম বদলে ইসলামী ছাত্রশিবির নামে আত্মপ্রকাশ করে। মীর কাসেম ছিলেন ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ওই সময় থেকে তিনি জামায়াতের রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে দলটির অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্ত করার উদ্যোগ নেন। ১৯৮০ সালে মীর কাসেম রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামী নামের একটি বিদেশি বেসরকারি সংস্থার এ দেশীয় পরিচালক হন। ১৯৮৫ সাল থেকে তিনি জামায়াতের শূরা সদস্য। দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম জামায়াতের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত। জামায়াতের অর্থের সবচেয়ে বড় জোগানদাতাও তিনি। ফলে তার বিচার নিয়ে দেশবাসীর মনে শঙ্কা ছিল বেশি। কিন্তু সব আশঙ্কা দূর হয়ে অবশেষে এই ঘাতকের ফাঁসি তথা মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে আজ ২ নভেম্বর। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ রায় দিয়েছে। মামলার কার্যক্রম শেষ হওয়ার প্রায় ছয় মাস পর আজ এ রায় ঘোষণা করা হলো।
মীর কাসেমের বিরুদ্ধে আনা ১৪ অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয়েছে। দুটি অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আটটি অভিযোগে তাঁকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি চারটি অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি। চট্টগ্রামে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জনকে হত্যার দায়ে (অভিযোগ নম্বর ১১) মীর কাসেমকে সর্বসম্মত মতের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। অপরদিকে দুজনকে হত্যার দায়ে (অভিযোগ নম্বর ১২) তাঁকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
একাত্তরে নৃশংসতা : চট্টগ্রাম শহরের নন্দনকানন টিঅ্যান্ডটি অফিসের পেছনের সড়কে এক হিন্দু পরিবারের মালিকানাধীন মহামায়া ভবনটি ১৯৭১ সালে আলবদর বাহিনী কেড়ে নিয়ে এর নাম দিয়েছিল ডালিম হোটেল। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত ডালিম হোটেলই ছিল চট্টগ্রামে আলবদর ও রাজাকারদের অন্যতম নির্যাতনকেন্দ্র। এ বন্দিশিবির ও নির্যাতনকেন্দ্রে আলবদরদের হাতে নির্যাতনের শিকার ও খুন হয়েছেন চট্টগ্রামের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী বাঙালি। আর একাত্তরে ইসলামী ছাত্রসংঘের চট্টগ্রাম শহর শাখার সভাপতি হিসেবে সেখানকার আলবদরের প্রধান ছিলেন মীর কাসেম আলী। ওই সময় তাঁর নেতৃত্বাধীন আলবদর বাহিনীর নির্যাতনের স্মৃতি স্মরণ করে আজও শিউরে ওঠেন চট্টগ্রামের অনেক মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।
মুক্তিযোদ্ধা নাসিরুদ্দিন চৌধুরী একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর ধরা পড়েছিলেন আলবদর বাহিনীর হাতে। তারপর থেকে ওই কুখ্যাত ডালিম হোটেলে তাঁর ওপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলের একটি কক্ষে অন্য বন্দিদের সঙ্গে চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল। ওই সময় অন্য বন্দিদের সঙ্গে তাঁকেও প্রচণ্ড মারধর করে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে তথ্য আদায় করার চেষ্টা চালায় আলবদররা। চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক দ্য পিপলস ভিউর ডেপুটি এডিটর নাসিরুদ্দিন বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের জানান, ডালিম হোটেলে সারাক্ষণ চলত বন্দিদের ওপর নির্যাতন আর নির্যাতিতদের চিৎকার-কান্নাকাটি। ওই নির্যাতনের মূল হোতা ছিলেন মীর কাসেম আলী।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই নির্যাতনকেন্দ্রে ২৩ দিন বন্দি ছিলেন তখনকার চট্টগ্রাম জয় বাংলা বাহিনীর উপপ্রধান মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। একাত্তরের ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের কদমতলীর বাড়ি থেকে তাঁকে ধরে নিয়েছিল আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি মুক্তি পান। নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “মীর কাসেম যখন ডালিম হোটেলে আসত, তখন বদর সদস্যরা পাহারায় থাকা অন্যদের বলত, ‘কাসেম সাব আ গেয়া, তোম লোক বহুত হুঁশিয়ার।’ সে আসার পর বন্দিরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়তেন।”
গণতন্ত্রী পার্টির নেতা সাইফুদ্দিন খান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর তৎপরতা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা সাংবাদিকদের বলেছেন। একাত্তরের ৩ নভেম্বর একদল রাজাকার তাঁকে তাঁর বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ওই ডালিম হোটেলে। একাত্তরের ১৭ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডালিম হোটেলে আলবদর বাহিনীর হাতে চরমভাবে নির্যাতনের শিকার হন তিনি। সাইফুদ্দিন খানের স্ত্রী ও মহিলা পরিষদ নেত্রী নূরজাহান খান সাংবাদিকদের জানান, একাত্তরের ১৭ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে একদল রাজাকার-আলবদর তাঁদের বাসায় গিয়ে সাইফুদ্দিন খানকে ধরে নিয়ে যায়। তাদের বেশির ভাগই ছিল মুখোশ পরা। তবে একপর্যায়ে তাদের দলনেতা মুখোশ খুলে ফেলায় মীর কাসেম আলীকে চিনে ফেলেন তিনি।
‘হানাদারদের নির্যাতন কক্ষে’ শিরোনামে ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি দৈনিক পূর্বদেশ-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামের ওই বন্দিশিবির থেকে সৌভাগ্যক্রমে মুক্ত বন্দিদের সবাইকে কিছু কিছু স্থায়ী নির্যাতনের চিহ্ন নিয়ে আসতে হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২ আগস্ট চট্টগ্রাম শহর ইসলামী ছাত্রসংঘের উদ্যোগে মুসলিম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সমাবেশে সভাপতির ভাষণে মীর কাসেম আলী বলেন, ‘গ্রামগঞ্জের প্রতিটি এলাকায় খুঁজে খুঁজে শত্রুর শেষ চিহ্ন মুছে ফেলতে হবে।’
১৯৭১ সালের ৭ নভেম্বর তথাকথিত বদর দিবস উপলক্ষে ঢাকায় ইসলামী ছাত্রসংঘ আয়োজিত এক সমাবেশে মীর কাসেম আলী বলেন, ‘পাকিস্তানীরা কোনো অবস্থায়ই হিন্দুদের গোলামী বরণ করতে প্রস্তুত নয়।’
১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রসংঘের শীর্ষ নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এবং সাধারণ সম্পাদক মীর কাসেম আলী এক যুক্ত বিবৃতিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের বেতার ভাষণকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এ দেশের ছাত্র-জনতা ১৯৬৫ সালের মতো ইস্পাতকঠিন শপথ নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করে যাবে।’
আলবদর থেকে ধনকুবের
মীর কাসেম আলীর জন্ম সাধারণ এক সরকারি কর্মচারীর ঘরে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি পালিয়ে লন্ডন হয়ে চলে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে থেকেই সংগঠিত করেন স্বাধীনতাবিরোধীদের। নানা উপায়ে কামিয়ে নেন প্রচুর অর্থ। বর্তমানে তিনি দেশের অন্যতম প্রধান ধনাঢ্য ব্যক্তি। তাঁর মালিকানাধীন কেয়ারি গ্রুপের সহস্রাধিক অ্যাপার্টমেন্ট ও বিপণিবিতান রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে; আছে সমুদ্রগামী জাহাজ। ইসলামী ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের তিনি অন্যতম উদ্যোক্তা। ব্যাংকটির বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন সময়। বছরদুয়েক আগে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু নিজে সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসলামী ব্যাংক তার লাভের ৪ শতাংশ ব্যয় করে জঙ্গিদের পেছনে। মীর কাসেম আলী বর্তমানে দিগন্ত টিভির চেয়ারম্যান এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন)। এ ছাড়া রাবিতা আল ইসলামী, ইবনে সিনা ট্রাস্টের মতো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানও গড়ে ওঠে তাঁর হাতেই।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৮২ কোটি টাকায় লবিস্ট নিয়োগ : মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী ও এর নেতারা। রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করতে না পেরে তারা যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছে। লবিস্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে ২৫ মিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১৮২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত একটি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে চুক্তির অর্থও পাঠিয়েছেন জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংককে না জানিয়ে কনসালট্যান্সি বাবদ ২৫ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হয়ে থাকলে সেটা মানি লন্ডারিং অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও বিষয়টি তদন্ত করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে লবিস্ট নিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি কনসালট্যান্সি ফার্মের সঙ্গে ২৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেন জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। ছয় মাসের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কনসালট্যান্সি ফার্ম কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের সঙ্গে এই চুক্তি করেন ২০১০ সালের ১০ মে। চুক্তিপত্রের একটি কপি থেকে জানা যায়, ওই চুক্তি অনুযায়ী ২৫ মিলিয়ন ডলার অগ্রিম পরিশোধ করতে হয়েছে মীর কাসেম আলীকে। সিটি ব্যাংক এনএর মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ট্রান্সফার পদ্ধতিতে চুক্তির অর্থ কেসেডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের হিসাব নম্বরে (৩০৭১৭২৪৮, সুইফ্ট কোড : সিটি ইউএস ৩৩) পাঠানো হয়েছে।
কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কংগ্রেসম্যান মার্টি রুশো। অনুসন্ধানে পাওয়া নথি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা হচ্ছে ৭০০ থার্টিনথ স্ট্রিট, এনডাবি্লউ, সুইট-৪০০, ওয়াশিংটন ডিসি। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ ও লবিং করাসহ মীর কাসেম আলীর উদ্দেশ্য সফল করাই এই চুক্তির লক্ষ্য বলে চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১০ সালের ১০ মে চুক্তিটি সই হয়। এতে সই করেন মীর কাসেম আলী এবং কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের পে-জেনারেল কাউন্সেল অ্যান্ড্রু জে. ক্যামেরস। মীর কাসেম আলীর উদ্দেশ্য সফল করতে ২০১০ সালের ৬ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছয় মাস যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে লবিং করার জন্য এ চুক্তি করা হয়। প্রয়োজনে আরো ২৫ মিলিয়ন ডলার (১৮২ কোটি টাকা) দিয়ে চুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো যাবে বলে চুক্তিপত্রে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়াও চুক্তির বাইরে মামলা খরচসহ অন্যান্য খরচের ব্যয় বহন করতে আরো অর্থ দেওয়ার কথা কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসকে।
২০১০ সালের ৬ অক্টোবর মীর কাসেম আলীকে লেখা এক চিঠিতে কেসিডি অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের আন্তর্জাতিক কার্যক্রমবিষয়ক নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট আমোস জে. হোকস্টাইন উল্লেখ করেন, তাঁর (কাসেম) স্বার্থ রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এ বিষয়ে এ প্রতিবেদকেরই একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল কালের কণ্ঠে গত বছরের ২ জুন।
গত বছর ১ জুন এ বিষয়ে মীর কাসেম আলীর বক্তব্য জানতে তাঁর মালিকানাধীন দিগন্ত টেলিভিশনের কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী মোতাকাব্বেরের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়। মোতাকাব্বের জানান, এ বিষয়ে মীর কাসেম আলীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে হবে। কাসেম আলীর মোবাইল ফোন নম্বর চাইলে মোতাকাব্বের তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।